বিপাশার চোখ
আল মাহমুদআমি মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়েই চমকে যাই।
বিপাশা, এ দুটি চোখ তুমি কোথায় পেলে? মেয়েটি দিশেহারা।
বুঝিবা আমি কিছু একটা কেড়ে নিতে হাত বাড়িয়েছি। না না।
বিপাশা তোমার চোখের মতো মায়াবী দৃষ্টি,তোমার ভ্রƒর মতো অব্যর্থ ধনুক,
তোমার পলকের মধ্যে যুগান্তের পট পরিবর্তন, একমাত্র
ভাগ্যবান ছাড়া কারো সামনে আসে না। যেন একটা চীনা হংসী
চিবুক বাড়িয়ে দিয়েছে আমার টেবিলে।
আমি নির্লজ্জের মত বিপাশাকে দেখি। মুখে যদিও বলি
বিপাশা, তোমার নাম বিপাশা কেন? বিপাশা তো পাঞ্জাবের একটা নদী!
ঘোলা জলের ঘূর্ণি। অপরিচ্ছন্ন। আমি দেখেছি।
আমি মনে মনে ময়েটির নাম দিই যমুনা। যদিও মেয়েটির রং কালো।
ভাবি আমার সামনে কৃষ্ণমাধবের প্রেমিকা রাধা।
ও বাঙ্গালিনী রাধা, ও যমুনা,ঐ চোখ দুটি কোথায় পেলে?
লোহার বাসরে বেহুলার ঢুলু ঢুলু আঁখি তারা এখন তোমার
সৌভাগ্যের ললাটে।
আমি প্রেমিক ভাস্কর ফরহাদকে পাথরের ওপর স্থায়ী কালো
মিনেয় আঁকতে দেখেছি শিরির কালো আঁখিপল্লব।
মরুভূমির এক দ্রুতগামী উষ্ট্রীর পিঠে ধাবমান লায়লার
চোখের কথাও আমি জানি।
বিপাশা, এই চোখ তুমি কার কাছ থেকে চুরি করলে? তস্করী!
এক্ষুনি ফিরিয়ে দিয়ে এসো। নইলে রাজা সোলায়মানের রথের শব্দে
সারা জীবন তোমার ঘুম ভেঙ্গে যাবে।
আর তোমার চোখের জলে তৈরি হবে নতুন ফোরাতের স্রোত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন